Logo
Published on

শিশু-কিশোরদের পাঠ্যপুস্তকে বিকৃতির শিক্ষা - ট্রান্সজেন্ডার বিকৃতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান

Authors

শিশু-কিশোরদের পাঠ্যপুস্তকে বিকৃতির শিক্ষা: ট্রান্সজেন্ডার বিকৃতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান

পৃথিবীর জীবনের বিশুদ্ধতম আনন্দের উৎস কী? সন্তানের নিষ্পাপ ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে থাকা? ফোকলা দাঁতের হাসি কিংবা আধো আধো বুলি?

অধিকাংশ মানুষের কাছ থেকেই এমন উত্তর পাওয়া যায়। সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে মানুষ অসাধ্য সাধণ করে। নিজের জীবনের সকল সুখ আহ্লাদ ত্যাগ করে। গাধার খাটুনি খাটে। নিজের শত কষ্ট, শতো সীমাবদ্ধতার পরেও পরম ভালোবাসা,যত্ন আর মমতায় রাঙ্গিয়ে দেবার চেষ্টা করেন শৈশব কৈশোরের প্রতিটি মুহূর্ত।

কিন্তু যাদের সুখের জন্য, সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য আপনি নিজের জীবনকে বিসর্জন করেছেন তাদের জীবনকে বিষিয়ে দেবার আয়োজন করা হয়েছে সুপরিকল্পিতভাবে - তা কি আপনি জানেন? সপ্তম শ্রেনীর বইতে ব্যক্তি স্বাধীনতা এবং সহিষ্ণুতার নামে পশ্চিমা বিশ্ব থেকে আমদানী করা ভয়ঙ্কর এলজিবিটি এজেন্ডার (LGBT Agenda) বিষ প্রবেশ করানো হয়েছে। সহজ ভাষায় এলজিবিটি এজেন্ডার উদ্দেশ্য অধিকারের নামে অসুস্থতা এবং নানাধরণের যৌন বিকৃতির স্বাভাবিকীকরণ।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড NCTB সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুশীলন বইয়ে ৫১- ৫৬ পৃষ্ঠায় ‘শরীফার গল্প’ শিরোনামের লেখায় ৫১ পৃষ্ঠায় মূল চরিত্র শরীফা বলছে, “আমার শরীরটা ছেলেদের মতো হলেও আমি মনে মনে একজন মেয়ে...

৫২ পৃষ্ঠায় মূল চরিত্র শরীফাকে একজন বলছে, “আমরা নারী বা পুরুষ নই। আমরা হলাম ট্রান্সজেন্ডার”।

৫৬ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, যতক্ষণ না অন্যের কোনো ক্ষতি হচ্ছে ততক্ষণ যা খুশি তাই করা যায়। একজন মানুষ পুরুষের শরীর নিয়ে জন্মগ্রহণ করলেও সে যদি কোনো এক বয়সে নিজেকে নারী দাবী করে তাহলে সে নারী। আবার নারী দেহ নিয়ে জন্মগ্রহণ করা কেউ যদি নিজেকে পুরুষ দাবী করে তাহলে সে পুরুষ। এমন আচরণ সমাজের জন্য কোনো ক্ষতিকর নয় এমন দাবী করে যারা এটা মেনে নেবে না তাদেরকে কটাক্ষ করা হয়েছে সেখানে।

এই কথাগুলোর মাধ্যমে ‘ট্রান্সজেন্ডার’ (transgender) নামক মানসিক অসুস্থতা ও বিকৃতিকে স্বাভাবিক হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি বইতে হিজড়া এবং ট্রান্সজেন্ডারকে একই (সমার্থক) হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এটি করা হয়েছে হিজড়াদের প্রতি থাকা সহানুভূতিকে কাজে লাগিয়ে ট্রান্সজেন্ডারবাদকে বৈধতা দেয়ার উদ্দেশ্য।

ট্রান্সজেন্ডার এবং হিজড়া দুটি এক না। সম্পূর্ণ ভিন্ন জিনিস। অভিধান অনুযায়ী হিজড়া শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ ট্রান্সজেন্ডার নয়, বরং Hermaphrodite বা Intersex। পার্থক্যটা শুধু অভিধানের পাতায় না। বাস্তবেও এ দুয়ের মাঝে আছে বিশাল ফারাক।

আমাদের সমাজে হিজড়া বলতে বোঝানো হয় এমন কোন মানুষকে যিনি জন্মগতভাবেই শারীরিক ত্রুটিসম্পন্ন। জন্ম থেকেই তাদের দেহে ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকে। অন্যদিকে ট্রান্সজেন্ডার হল এক ধরণের মানসিক সমস্যা। ট্রান্সজেন্ডার হলো এমন একদল মানুষ যাদের শারীরিক কোনো ত্রুটি নেই, কিন্তু ছেলে হয়েও নিজেদের মেয়ে বা মেয়ে হয়েও নিজেদের ছেলে দাবী করে।

সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী প্রতি ২০০০ জনে ১ জন মানুষ ইন্টারসেক্স বা হিজড়া হয়। জনসংখ্যার ০.০৫%। এছাড়া বাকি ৯৯.৯৫% মানুষ হয় নারী অথবা পুরুষ। ট্র্যান্সজেন্ডার এবং ইন্টারসেক্স, দুটো আলাদা জিনিস।

“একজন মানুষ পুরুষের শরীর নিয়ে জন্মগ্রহণ করলেও সে যদি কোনো এক বয়সে নিজেকে নারী দাবী করে তাহলে সে নারী। আবার নারী দেহ নিয়ে জন্মগ্রহণ করা কেউ যদি নিজেকে পুরুষ দাবী করে তাহলে সে পুরুষ” – এধরণের কথার কোন বাস্তবিক কিংবা বৈজ্ঞানিক ভিত্তিও নেই।

ট্রান্সজেন্ডার অসুস্থতায় ভোগা অনেকে সার্জারির মাধ্যমে যৌনাঙ্গ পরিবর্তন করে। অনেকে নানা ধরণের হরমোন ব্যবহার করে যেগুলো দীর্ঘমেয়াদে নানা ধরণের ক্ষতি করে। এগুলোর নানা ধরণের শারীরিক ও মানসিক জটিলতা তৈরি হয়। মিডিয়া আর শিক্ষাব্যবস্থার ব্রেইনওয়াশিং এর ফলে হয়ে বিগত ৭/৮ বছরে পশ্চিমা বিশ্বে এধরণের সার্জারি আর হরমোনের ব্যবহার হুট করে বহুগুনে বেড়েছে। সার্জারি করার পর ভুল বুঝতে পারে অধিকাংশই। কিন্তু ফেরার পথটা বড়ই কঠিন।

  • “আমাকে ব্যবহার করা হয়েছে। আমি বোকা ছিলাম। লিঙ্গ পরিবর্তন ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল। আমি নিজেই আমার জীবনটা ধ্বংস করেছি”- ক্রিস বেক (৫৫), প্রথম প্রকাশ্য ট্রান্সজেন্ডার ইউএস নেভি সিল। [ডেইলি মেইল, ১২.১২. ২০২২]
    https://tinyurl.com/usbake

  • লিঙ্গ পরিবর্তনের পর পূর্বের লিঙ্গে ফেরত যাবার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরা হতাশ, আত্মহত্যা প্রবণ। মিরোশ্লাভ জরডজেভিক , ইউরোলোজিস্ট, বিশেষজ্ঞ লিঙ্গ পরিবর্তন সার্জন। [নিউজউইক,১০.৩.১৭] - https://tinyurl.com/surgon

ট্রান্সজেন্ডারবাদের হাত ধরে আসে সমকামিতা আর অন্যান্য বিকৃত যৌনতা। এবং সমকামিতার সকল উপসংহার- এইডস,মাংকিপক্স এর মতো প্রাণঘাতী অসুখ হতাশা,আত্মহত্যা, শিশু যৌন নির্যাতন, ধর্ষণ,সহিংসতা। পাশাপাশি বাস্তবতাকে উপেক্ষা করে নিজের শরীর, পরিচয়, সব বদলানোর চিন্তা করা মানুষের অনেকেরি গভীর হতাশাসহ (ডিপ্রেশন) অন্যান্য মানসিক সমস্যায় ভোগেন।

১০ বছর গবেষণার পর প্রাপ্ত তথ্যমতে,ট্রান্সজেন্ডার কিশোর কিশোরী সাধারণ কিশোর কিশোরীদের তুলনায়-

  • ছয়গুন বেশী উদ্বিগ্নতায় ভোগে
  • তিনগুন বেশী হতাশার ঔষুধ খায়
  • ছয়গুন বেশী আত্মহত্যার ব্যর্থ চেষ্টা থেকে হাসপাতালে ভর্তি হয় [The American Journal of Psychiatry https://tinyurl.com/transstat1 ]

শিশুকিশোররা সহজে প্রভাবিত হয়, নতুন জিনিসের প্রতি তাদের থাকে সহজাত আগ্রহ। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কোমলমতি কিশোরদের সামনে বিকৃতি ও অসুস্থতাকে স্বাভাবিক হিসেবে তুলে ধরছে গনশত্রুরা। বয়ঃসন্ধিকালে এমনিতেই নানা মনস্তাত্তিক জটিলতা সৃষ্টি হয়। তার উপর লিঙ্গ নিয়ে এমন বিভ্রান্ত ধারণায় মগজ ধোলাই কিশোর কিশোরীদের জীবন বিষিয়ে দেবে। জন্ম নিবে নানা ধরণের অসুখ ও অসঙ্গতি।

পাঠ্যপুস্তকে ট্রান্সজেন্ডারবাদের প্রচারের পরের ধাপ হল এই অসুস্থতার সামাজিক ও আইনী বৈধতা। পশ্চিমা বিশ্বে এভাবেই বিষয়টি এগিয়েছে। আর আমাদের দেশে এগুলোর প্রচার ও প্রসার চলছে পশ্চিমেরই মদদে। সপ্তম শ্রেণীর বইতে বলা কথাগুলো সরাসরি পশ্চিমা বিশ্ব থেকে আমদানী করা। যতক্ষণ পর্যন্ত অন্য কারও ক্ষতি না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত যা খুশি করা যায় – এই মূলনীতির মাধ্যমে পশ্চিমা বিশ্বে সমকামিতা, “সমকামি বিয়ে” থেকে শুরু করে ব্যভিচারসহ প্রায় সব ধরণের বিকৃত যৌনাচার ও জীবনাচরণকে বৈধতা দেয়া হয়েছে। পরিবার ভেঙ্গে পড়েছে। অর্ধেকের বেশি সন্তানের জন্ম হচ্ছে জারজ হিসেবে।

-- ফ্রান্স, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ড, সুইডেন এবং নরওয়ের মতো দেশে ৫০% এর বেশি নবজাতকদের জন্ম হয় জারজ বা বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের ফসল হিসেবে। অ্যামেরিকাতে মোট নবজাতকদের ৪০% জারজ [সূত্রঃ Statista, https://tinyurl.com/4a5z4khh]

-- অ্যামেরিকার ১১-২৬ বছর বয়েসীদের ১৭% বিকৃত যৌনতায় অভ্যস্থ [সূত্রঃ গ্যালাপ, https://tinyurl.com/gallup21lgbt]

-- জার্মানির প্রতি ৪ জন বৃদ্ধ নাগরিকের ১ জন মাসে মাত্র একবার অন্য মানুষের সাক্ষাত পায়, অনেকে তাও পায় না। আমেরিকায় প্রতি ৩ জন বৃদ্ধের ১ জন একাকী বসবাস করে( সমকামী,ট্রান্সদের মধ্যে এ হার আরও বেশী)। ধুঁকে ধুঁকে মারা যায় মারা যায় বৃদ্ধাশ্রমে বা একাকী ফ্ল্যাটে। [tinyurl.com/usoldhome tinyurl.com/germanold]

-- আমেরিকায় ৫ জনে ১ জন আত্মহত্যা করার কথা ভাবছে tinyurl.com/usasui

-- সবচেয়ে হতাশাগ্রস্থ দেশের তালিকার ১ নম্বরে ইউক্রেন ২ নম্বর আমেরিকা ৪ নম্বর অস্ট্রেলিয়া tinyurl.com/deprate

আমরা কি আমাদের সন্তানদের জন্য এমন ভবিষ্যৎ চাই? আমরা কি চাই এমন সমাজ? আমরা কি এই মূলনীতি অনুসরণ করে পাশ্চাত্যের মতো সমকামিতা, ব্যভিচার সবকিছুকে গ্রহণযোগ্য বানাতে চাই? না, আমরা অবশ্যই এমন পরিণতি চাই না। কিন্তু পাঠ্যবইয়ের মাধ্যমে এই বিষ ঢেলে দেয়া হচ্ছে আমাদের নতুন প্রজন্মের চিন্তায়।

ইসলামের অবস্থান:

মুসলিম হিসেবে আমাদের মাপকাঠি ইসলাম। পবিত্র কুরআনের আরেকটি নাম হল আল-ফুরকান যার অর্থ হল সত্য মিথ্যার পার্থক্য নির্ধারণকারী। আমাদেরকে সবচেয়ে বেশী ভালোবাসেন আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (ﷺ)। দৈনন্দিন জীবনের নিয়ম কানুন থেকে শুরু করে বিশ্ব পরিচালনা খুঁটিনাটি, সবকিছু সম্পর্কে তাঁরা আমাদের অবহিত করেছেন যেন পথ হারিয়ে না ফেলি। মানব সভ্যতার জন্য ক্ষতিকর বিষয়গুলোকে তারা নিষিদ্ধ করেছেন। আসুন দেখা যাক এ ব্যাপারে ইসলাম আমাদের কী সমাধান দেয়।

ইসলাম আমাদের স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়, আল্লাহ মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছেন হয় পুরুষ অথবা নারী হিসেবে। এর বাইরে তৃতীয় লিঙ্গ, ট্রান্সজেন্ডার বা অন্য যা কিছু আছে সেগুলো মানুষের তৈরি করা শ্রেনীবিভাগ। ব্যক্তির কী "মনে হয়", সেটা নয় বরং ইসলাম দৈহিক বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে মানবজাতিকে নারী ও পুরুষ হিসেবে নির্ধারণ করেছে। যারা হিজড়া অর্থাৎ যাদের শারীরিক ত্রুটি আছে, তাদের শরীরেও পুরুষ বা নারী কোন একটি দিকের প্রাধান্য থাকে, এবং সেটা অনুযায়ী তাদের বিচার করা হয়।

রাসূলুল্লাহ ﷺ দৈহিক বৈশিষ্ট্য পুরুষের কাছাকাছি এমন হিজড়াদের পুরুষ ও দৈহিক বৈশিষ্ট্য নারীদের কাছাকাছি এমন হিজড়াদের নারী হিসেবে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছেন। সুনানে বাইহাকী কুবরা, হাদীস নং ১২৯৪]

নারী পুরুষের পরস্পরের বেশ ধারণ করা নিষিদ্ধ। ইবনু আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেছেন:

“রাসূলুল্লাহ ﷺ পুরুষদের মধ্যে নারীর বেশ ধারণকারীদের এবং নারীদের মধ্যে পুরুষের বেশ ধারণকারিণীদের অভিশাপ দিয়েছেন”। [সহীহ বুখারী; মিশকাত, হাদীস নং ৪৪২৯।]

রাসূলুল্লাহ ﷺ আরও বলেছেন, আল্লাহ সেসব মানুষদের উপর অভিসম্পাত করেছেন যারা তাঁর সৃষ্টিতে বিকৃতি আনে?(বুখারি, হাদিস : ৪৮৮৬)

ট্রান্সজেন্ডারের অবশম্ভাবী পরিণতি হলো সমকামিতাসহ অন্যান্য যৌন বিকৃতি। সমকামিতা জঘন্য অপরাধ। এ অপরাধের কারণে আল্লাহ লূত আলাইহিস সালামের সম্প্রদায়কে কঠিন শাস্তি দিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ ﷺ জানিয়েছেন আল্লাহ তা‘আলা এমন ব্যক্তির প্রতি রহমতের দৃষ্টিতে কখনো তাকাবেন না যে সমকামে লিপ্ত হয় ।”[ ইবন আবী শাইবাহ, হাদীস নং ১৬৮০৩; তিরমিযী, হাদীস নং ১১৬৫]

শৈশবে বিপরীত লিঙ্গের পোষাক পরা, সাজগোজ করা, যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া, সমকামী অশ্লীল ভিডিও দেখা ইত্যাদি কারণে কোনো কোনো ব্যক্তির সমলিঙ্গের প্রতি ক্ষণিক আকর্ষণ জন্মাতে পারে, অথবা আত্মপরিচয়ের ব্যাপারে তৈরি হতে পারে বিভ্রান্তি। এটা একধরণের মানসিক সমস্যা, বিকৃতি। পশ্চিমা সমাজেও কিছুদিন আগ পর্যন্ত এটাকে মানসিক সমস্যা হিসেবেই বিবেচনা করো হতো।

কারও মধ্যে অসুস্থতা থাকলে, কারও সাহায্যের প্রয়োজন হলে আমরা তাদের দূরে ঠেলে দেবো না। কারও প্রতি নাইনসাফী করবো না। এমন মানুষদের উপর আক্রমণ না করে, কটূ কথা না বলে চিকিৎসার মাধ্যমে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা একান্ত প্রয়োজন।

কিন্তু তাই বলে স্বাধীনতা, কিংবা সহিষ্ণুতার নামে আমরা অসুস্থতাকে মেনে নিতে পারি না। মানসিক অসুস্থতা আর অস্বাভাবিক আচরণকে স্বাভাবিক বলে স্বীকৃতি দিতে পারি না। এটা অসম্ভব। অস্বাভাবিকতাকে স্বাভাবিকতা বলা হলে, অসুস্থতাকে সুস্থতা বলা হলে তা পুরো সমাজকে অসুস্থ করে তুলবে। অস্বাভাবিকতার স্বীকৃতির অর্থ হলে সেটার প্রসার। এতে করে যারা অসুস্থ তাদের উপকার হবে না, বরং দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতি হবে। অপরিমেয় ক্ষতি হবে সমাজেরও।

যা যা করা যেতে পারে-

১। ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুর ভয়াবহতা সম্পর্কে সম্ভাব্য সকল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে দল মত ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে সচেতন করা

২। কোমলমতি শিশু কিশোরদের ট্রান্সজেন্ডার-এর প্রকৃত স্বরূপ বোঝানো। বিপরীত লিঙ্গের পোষাক না পরানো। যৌন নির্যাতনের হাত থেকে বাচানোর জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকা।

৩। বিকৃতির পক্ষে পাঠ্যবই এবং মিডিয়ার প্রচারণার ব্যাপারে নিজে সতর্ক হওয়া। নিজ সন্তান, পরিবার ও সমাজকে সতর্ক করা।

৪। পাঠ্যবইয়ে এই জঘন্য বিষ প্রবেশ করানোর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া। বিভিন্ন বিষয়ও পাঠ্যপুস্তকে আন অভিভাবকসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষদের নিয়ে সম্মিলিতভাবে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন, প্রতিবাদলিপি,সভা সেমিনার,টকশো ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালনা করা। আমেরিকা, পোলান্ড, ব্রিটেনসহ অনেক দেশে অভিভাবকেরা এই ইস্যুতে সোচ্চার হয়েছেন এবং ইতিবাচক ফলাফলও পেয়েছেন। আমাদেরও সচেতন হতে হবে। আমাদের দেশে আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করা হবে, তাও আমাদেরই দেয়া করের টাকায়, এটা মেনে নেয়া যায় না।

৫। ট্রান্সজেন্ডার বিকৃতির পাশাপাশি পাঠ্যপুস্তকে ইসলামবিদ্বেষের প্রকাশ এবং ইতিহাস বিকৃতিও ঘটেছে। এগুলোর বিরুদ্ধেও অবস্থান নেয়া।

অভূতপূর্ব এক সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। কোমলমতি শিশু কিশোরসহ সমগ্র জাতিকেই এক মৃত্যুফাঁদে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। সচেতন হতে হবে সবাইকেই…

আপনার সন্তানের নিষ্পাপ হাসির জন্য

আপনার ছোটো ভাইবোনের সরলতায় মোড়ানো কৈশোরের জন্য

তাবৎ শ্বেত শুভ্রতা আর পবিত্রতার জন্য

হাজী শরীয়তউল্লাহ, তিতুমীর আর অসংখ্য শহীদের রক্ত দিয়ে কেনা এই যমীনের জন্য,

রাব্বুল আলামীনের সন্তুষ্টির জন্য, তাঁর শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য।